Asian Paradise Flycatcher

একটি দুধরাণী। Picture: Mahin Nur

একটি দুধরাণী। Picture: Mahin Nur

লেখা: Mahin Nur

নামটি সরাসরি বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায়,  স্বর্গের পাখি । পাখিটির সৌন্দর্য এতটাই স্বর্গীয় যে, একে সত্যিকার অর্থে স্বর্গের পাখি বললেও খুব একটা ভুল হবে না। পাখিটির দেশীয় নাম দুধরাজ। আবার শাহ বুলবুলি নামেও ডাকা হয়। পাখিটির দেহের আকার মোটামুটি ২২সে.মি.।পাখিটির সাথে আমার প্রথম দেখা হয় আমার দাদুবাড়ি ময়মনসিংহে, ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে। প্রচন্ড অশান্ত এবং ছটফট করতে থাকা পাখিটি এই ডাল থেকে সেই ডালে উড়ে বেড়াচ্ছিল।

খয়েরি পর্বের দুধরাজ। ছবি: Aminoor Rahman

খয়েরি পর্বের দুধরাজ। ছবি: Aminoor Rahman

পাখিটির স্ত্রী এবং পুরুষের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। স্ত্রী পাখির ডানা ও লেজ লালচে এবং পেট কালচে। পুরো মাথা এবং ঝুটি কালো। গলা থেকে পেটের দিকে কালো হতে কালচে রঙ ধারন করে।পুরুষ পাখিটির দুটি পর্ব রয়েছে। খয়েরি পর্ব ও শ্বেত পর্ব। প্রথম পর্বটি হলো খয়েরি পর্ব। এ পর্বে পাখির পিঠ-ডানা-লেজ লাল ও পেট কালচে। পাখিটি যখন দ্বিতীয় বর্ষে পদার্পন করে তখন এর দেহের রঙ খয়েরি থেকে সাদায় রূপান্তরিত হয়। এই শ্বেত পর্বে, ডানার প্রান্ত এবং মাথা ছাড়া বাকি পুরো দেহ সাদা। উভ্য় পর্বেই মাথা এবং ঝুটি কাল। পুরুষ দুধরাজের সবচেয়ে আকর্ষনীয় দিকটি হল, লম্বা ফিতার মতো লেজের মাঝের বর্ধিত পালক যা সাধারণত লম্বায় ৩০ সেমি পর্যন্ত হয়।পাখিটির ডানা প্রায় ৮.২-৯.৬ সেমি হয়। পাখিটির চোখের রিং নীল। একে মধ্য এশিয়া থেকে উত্তরপূর্ব চীনের ঘন জংগলগুলোতে পাওয়া যায়। সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন বনে-বাগানে এদের পাওয়া  যায়।

পাখিটির ডাক অত্যন্ত কর্কশ।ডাকঃ “চ্রিট, চিউচিউ, কুয়িঙ্ক”। এরা কীট পতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকে। এরা প্রতিদিন দুপুরে কাছের জলাশয়ে গোসলের জন্য ঝাপ দেয়। মে থেকে জুলাই হল তাদের জনন মৌসুম।দুধরাজ অত্যন্ত সুন্দর করে বাসা বানায়। বাসাগুলো দেখতে অনেকটা কাপের মত। প্রজনন মৌসুমে দুধরাণী একবারে তিন-চারটি ডিম পাড়ে। ২১-২৩ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়।

শ্বেত পর্বের দুধরাজ। ছবি: Aminoor Rahman

শ্বেত পর্বের দুধরাজ। ছবি: Aminoor Rahman

পাখিটিকে ২০০৪ সালে IUCN RedList প্রকল্পের স্বল্প গুরুত্বসম্পণ্ন (Least Concern) ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

লেখা: Mahin Nur