আজ আম পাড়া শুরু চাঁপাই ও রাজশাহীতে – সাজ সাজ রব, ঢাকা সয়লাব সাতক্ষীরার আমে


25 May 2016. আনোয়ার আলদীন  :

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগাঁতে চলছে সাজ সাজ রব। আর ঢাকায় ক্রেতাদের উন্মুখ অপেক্ষা। মধুমাসের মধুফল আম এবার পরিপক্ব হয়েই গাছ থেকে নামছে। আজ বুধবার থেকে বাজারে আসছে আগাম জাতের গোপালভোগ ও গুটি জাতের আম। ক্ষীরসাপাত বা হিমসাগর ও লক্ষণভোগ আম ১ জুন, ল্যাংড়া ও বোম্বাই ১০ জুন, ফজলি ২৫ জুন, আম্রপালি ১ জুলাই এবং আশ্বিনা ১৫ জুলাই থেকে বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে নাবি জাতের ফজলিসহ অন্যান্য আম পর্যায়ক্রমে বাজারে আসবে। এবছর অকালে গাছ থেকে অপরিপক্ব আম পেড়ে কেমিক্যাল মিশিয়ে বাজারজাতকরণ বন্ধ রেখেছে সরকার। কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, বিষমুক্ত আম বাজারজাতে উদ্বুদ্ধকরণ সভা ও ২৫ মের আগে ট্রাকে করে আম পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং লিফলেট বিতরণসহ মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে আসছে। তবে আমের রাজধানী থেকে আম না আসলেও আগাম আম এসেছে সাতক্ষীরা, খাগড়াছড়িসহ কয়েকটি জেলা থেকে। এসেছে ভারতীয় আমও। রাজধানীর বাজারে আমের যে সমারোহ তা ভালো মানের নয়। ভালো মানের আম বলতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং রাজশাহীর আম। সাতক্ষীরা, খাগড়াছড়িসহ দেশের ২২টি জেলায় এখন বাণিজ্যিকভিত্তিতে আমের চাষ হচ্ছে। যার মান খুব ভালো না। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীর আম চাষি, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিচর্যার অভাব আর বেশি তাপমাত্রার নেতিবাচক প্রভাবে আমের আকার অনেক ছোট হয়ে গেছে। এবার রাজশাহী অঞ্চলের আবহাওয়া চরম থাকায় নির্ধারিত সময়ের আগেভাগেই পাকতে শুরু করেছে আম। শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের কালিনগরের আম ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, অসাধু আম ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে আম চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে সদর উপজেলার বেলেপুকুরের একজন চাষি বলেন, এলাকার আম চাষিরা কেমিক্যাল তেমন ব্যবহার করে না। করলে অনেক আগে ধরা পড়ত। ঢাকার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফার লোভে বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে দেয় আমে। তার প্রভাবে গত বছরে অনেক আম ধ্বংস করে প্রশাসন। এবার সেই কেমিক্যাল মেশানোর কোনো সুযোগই নেই। কারণ সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে আম পাড়ার। চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবস্থিত আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের হিসাবে, সবচেয়ে ভালো মানের ও বেশি আম হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। এ জেলার প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। এরপরেই রয়েছে রাজশাহী। এখানে এ বছর ১৬ হাজার ৫১৯ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এই দুই জেলাকে দেশের বাণিজ্যিক আম চাষের আদিভূমি বলা হয়। গত ১০ বছরে দেশে আমের উত্পাদন চার গুণ বেড়েছে। ধান ও অন্যান্য শস্যের চেয়ে চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি লাভ হওয়ায় চাষিরা আমের দিকে ঝুঁকছেন। কারণ একটি আম গাছ ৫০ বছর পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে ফল দেয়ার পরও দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে। কানসাটের জমিদারবাড়ির আম বাগান তার প্রমাণ। সুপ্রাচীন এই আমবাগানের গাছগুলো এখনো সুস্বাদু আম দিয়ে যাচ্ছে।

Source: www.ittefaq.com.bd/print-edition/last-page/2016/05/25/121643 Photo Source: nijhoom.com <http://nijhoom.com/bangladesh-tour/mango-tour/>